লিভার সিরোসিস মানুষের যকৃতের দীর্ঘস্থায়ী রোগের
ফল যা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত থেকে সৃষ্টি হতে পারে এবং মারাত্মক পর্যায়ের সিরোসিসে যকৃৎ
এর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে মানুষের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। সিরোসিসের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে
এতে যকৃতের সুস্থ-সবল কলা (tissue) ক্ষয়যুক্ত
কলা বা নডিউল (nodule) দ্বারা
প্রতিস্থাপিত হয়ে যায় ফলে যকৃত আর কাজ করতে পারে না। সিরোসিসের প্রধান কারণগুলোর
মধ্যে যকৃতের দীর্ঘস্থায়ী রোগ এবং যকৃতে সংক্রমণ ছাড়াও দীর্ঘদিন যাবৎ অতিরিক্ত মদ্যপান, হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, ফ্যাটি লিভার রোগ ইত্যাদি। তবে সিরোসিসের
প্রধান কারণ দেশ অনুযায়ী ভিন্ন হয়। যেমন ইউরোপ এবং আমেরিকায় সিরোসিস হয় প্রধানতঃ
মদ্যপানের ফলে আর হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের আক্রমনে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে প্রধানতঃ হেপাটাইটিস
বি ভাইরাসের আক্রমণ আর ফ্যাটি লিভার, লিভার সিরোসিসের পেছনে দায়ী। এছাড়াও আরও অজানা
কারণে লিভার সিরোসিস হতে পারে।
লিভার সিরোসিসের লক্ষণঃ
লিভার সিরোসিসের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে লক্ষণ
অনেকের ক্ষেত্রে বোঝা যায় না। কোনো লক্ষণ ছাড়াই ধীরে ধীরে লিভারের মধ্যে প্রদাহ হতে
থাকে। তবে এটি যদি বেড়ে যায়, তখন দেখা
গেছে কারো পেটে পানি চলে আসে বা পায়ে পানি আসতে পারে। তার ক্ষুধামান্দ্য দেখা দিতে
পারে। শরীরে দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। এই জাতীয় সমস্যা নিয়ে সাধারণত লিভার সিরোসিসের
রোগীরা চিকিৎসকের কাছে আসে।
প্রাথমিক পর্যায়ে
বোঝার কোনো সম্ভাবনা না থাকলে।দুভাবে বোঝা যেতে পারে। প্রাথমিকভাবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে
লিভার সিরোসিসের রোগীদের ক্ষেত্রে জন্ডিস দেখা দিতে পারে। অথবা অন্য কোনো কারণে হয়তো
সে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়েছে, এই অবস্থায়
তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়েও এটি ধরা পড়তে পারে।
কীভাবে আপনি বুঝবেন
?
Ø প্রথমে শারীরিকভাবে
তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে। এর দ্বারা বোঝা যায় এই অসুখের লক্ষণ তার
মধ্যে আছে কিনা। এর পাশাপাশি কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হয় যে কী কারণে তার লিভার
সিরোসিস হয়েছে।এখানে দুটো বিষয়। একটি হলো তার কারণ দেখা। আরেকটি হলো সিরোসিস রোগের
কতটুকু কোন অবস্থায় আছে। সেগুলো দেখার জন্য আমরা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। এর মধ্যে
কিছু রক্তের পরীক্ষা করা হয়। আল্ট্রাসনোগ্রাম, এন্ডোস্কোপি
করা হয়। এগুলো করে আমরা তার অসুখের মাত্রা নির্ণয় করি। কারণটিও খুঁজে নিই। কারণের ওপর
নির্ভর করছে চিকিৎসাটি। চিকিৎসা দুই ধরনের। কারণ নির্ণয় করতে পারলে সেটার চিকিৎসা করা
হবে। পাশাপাশি লক্ষণ যে প্রকাশ পাচ্ছে বা সিরোসিসের যে জটিলতা হচ্ছে, সেই জটিলতাগুলো কমানোর জন্যও কিছু কিছু
চিকিৎসা করা হয়।









