Saturday, March 9, 2019

সন্তান না হওয়ার কারণ বা বন্ধ্যাত্বঃ

ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব একটি গুরুতর সমস্যা। যদি এক বছর কোনো দম্পতি একসাথে থাকেন এবং কোনোরকম বাধা ছাড়া (প্রোটেকশন) শারীরিক মেলামেশা করে, এরপরও যদি তাদের সন্তান না হয় তাহলে আমরা বলতে পারি তারা ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভুগছে।


* বন্ধ্যাত্বের কারণঃ
.
স্বামী বা স্ত্রী যে কোন একজন বন্ধা হতে পারে। চিকিৎসার মাধ্যমে বন্ধ্যাত্বের অনেক কারনগুলো সারিয়ে তোলা যায়। এখানে বন্ধ্যাত্বের বেশ কিছু কারন তুলে ধরা হলো –

১) স্বামীর কারণে বন্ধ্যাত্বঃ
.
 একটি অণ্ডকোষ, লুপ্তপ্রায় অণ্ডকোষ, অণ্ডকোষ জণ্মগতভাবে না থাকলে।
 শুক্রাণু বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় তাপ অণ্ডকোষে রক্ষা না হলে।
 অণ্ডকোষের প্রদাহ, মামস বা গলাফুলা রোগের প্রদাহের কারণে।
 স্বামীর বীর্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শুক্রাণু না থাকলে।
 যৌনাঙ্গে যক্ষ্মা, গনোরিয়া প্রভৃতি রোগ থাকলে৷
 মৃত শুক্রাণু বা শুক্রাণুবিহীন বীর্যের কারণে।
 অণ্ডকোষের শিরার স্ফীতাবস্থা। 
 যৌনক্রিয়ায় অক্ষম হলে।
 বিকৃত শুক্রাণু থাকলে।
২) স্ত্রীর কারণে বন্ধ্যাত্বঃ
.
 থাইরয়েড এবং লিভারের কোনও জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী রোগ থাকলে।
 প্রজনন অঙ্গে যক্ষ্মা, গনোরিয়া ইত্যাদি রোগ হলে ৷
 যদি জরায়ুর আকৃতিগত কোনও সমস্যা হয়।
 ডিম্বাশয় যদি সঠিকভাবে কাজ না করে।
 ডিম্বাশয়ে টিউমার থাকলে।
 ঋতুস্রাবের সমস্যা থাকলে।
 জরায়ুর টিউমার হলে।
 তলপেটে প্রদাহ হলে।
 বংশগত।

* নারী বা পুরুষ যে কোন একজনের অক্ষমতার কারনে সন্তান না হতে পারে। প্রায় ১০ শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায় কোনো সমস্যা নেই তারপরও সন্তান হচ্ছে না। 
.
* সন্তান প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়ার কিছু কারণঃ
.
১) বয়সঃ  আর্থিক ভাবে সচ্ছল, সুস্থ-স্বাভাবিক ও দুশ্চিন্তা মুক্ত জীবন যাপন সম্ভব হলে মেয়েদের ক্ষেত্রে ২০-৩৫ আর ছেলেদের ক্ষেত্রে ২০-৪০ বছর হলো সন্তান ধরণের শ্রেষ্ঠ সময়। 
.
২) ওজনঃ  অতিরিক্ত বেশি বা কম ওজনের কারণে শরীরের মধ্যে হরমোনাল ইমব্যালেন্স সৃষ্টি হতে পারে, যেটা নারী পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে সন্তান প্রজনের অক্ষমতা সৃষ্টি করতে পারে।
.
৩) ধূমপানঃ  সিগারেটের ধোঁয়া মহিলাদের শরীরের ফ্যালোপাইন টিউবকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যার কারণে ডিম্বানু নারীগর্ভে মসৃণভাবে পৌঁছাতে পারে না। আবার ধূমপান পুরুষদের স্পার্ম কাউন্ট কমিয়ে দেন। যা পুরুষের বীর্য কে সন্তান প্রজননের অযোগ্য করে তুলতে পারে।
.
৪) মদ্যপানঃ  অতিরিক্ত মদ্যপান পুরুষদের স্পার্মের গুণাগুণ নষ্ট করে। গবেষকদের মতে, বন্ধ্যাত্ব থেকে দূরে থাকতে কম মদ্যপান করাই বুদ্ধিমানের কাজ। পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই বিষয়টি প্রযোজ্য।
.
৫) মানসিকচাপঃ  বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ হতে পারে দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ পুরুষদের স্পার্ম কাউন্ট ও স্পার্মের গুণাগুণ নষ্ট করে। এক্ষেত্রে মহিলাদের ডিম্বস্ফোটনে সমস্যা হয়।

 সন্তান ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু টিপসঃ
.
• পিরিয়ড বা মাসিকের অষ্টম (৮) দিন থেকে ১৭ দিন পর্যন্ত গর্ভধারণের মোক্ষম সময়। এই সময় শারীরিক মিলন গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেক গুণ বাড়ীয়ে দেয়।
.
• পুরুষের শুক্রাণু জরায়ু বা ডিম্বনালীতে দুই থেকে তিনদিন বেঁচে থাকে। কিন্তুনারীর ডিম্বাণু মাত্র ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা নিষিক্ত হওয়ার অবস্থায় থাকে। তাই ডিম্বাণুনিষিক্ত হওয়ার সম্ভাব্য দিনে শারীরিক মিলন না করে মাসিক শেষ হওয়ার পর একদিন পর পর শারীরিক মিলন করতে হবে। যেন ডিম্বাণু প্রস্তুত হলে শুক্রাণু মিলিত হতে পারে।
.
• নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন, স্বাস্থ্যকর খাবার দাবার ইত্যাদি বিষয় ঠিক রাখা খুব জরুরী মা হতে চাইলে। তবে আর একটি ব্যাপার আছে  শারীরিক মিলন।


* শারীরিক মিলনে করণীয়ঃ
.
১) মিশনারি না নারীর উপরে পুরুষ এই অবস্থায় শারীরিক মিলন করুন।
২) মিলনের পর কম করে ২০-৩০ মিনিট নারীর উপর শুয়ে থাকুন।
৩) সাধারণত রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগের সময় কে বেঁচে নিন মিলনের জন্য।





No comments:

Post a Comment